টান টান উত্তেজনা কোপা'র মহারণ এ মুখোমুখি আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল !

   


আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা ।  আরেকটি মহারন এ মুখোমুখি আর্জেন্টিনা আর ব্রাজিল। এই গ্রহের দুই জনপ্রিয় ফুটবল দলের লড়াই দেখতে মুখিয়ে আছে পুরো দুনিয়ার ভক্তকুল। যদিও সাম্প্রতিক পারফরমেন্স কোন দলেরই আশাব্যাঞ্জক নয়। তারপর লড়াইটা যেহেতু জনপ্রিয় দুই দলের তাই উত্তেজনার পারদ ও বেশ চড়া। আর্জেন্টিনার পঞ্চদশ আর ব্রাজিল এর দশম কোপা জয়ের হাতছানি!ঘরের মাঠে টানা দ্বিতীয় ও নিজেদের দশম কোপা জয়ের হাতছানি ব্রাজিলের। নেইমারের হাতে উঠার অপেক্ষায় কোপা আমেরিকার এই ট্রফি এটাই কোটি দর্শকের প্রত্যাশা। কিংবা লিওনেল মেসি র হাতে । পুরো বিশ্ব দুই শিবির এ বিভাজিত । 

ব্রাজিল এর টীম ফরমেশনঃ ৪-৩-৩


গোলকিপার হিসেবে এডারসনকে রেখে যেহেতু গোল্ডেন গ্লাভসের দৌড়ে সে এগিয়ে। দুই ফুল ব্যাক লোডী ও দানিলু। সেন্টারব্যাক সিলভা ও মার্কোইনুইজ দুই  মিডে ক্যাসেমিরোর সাথে ফাবিনহোকে কারণ আর্জেন্টিনার আক্রমনভাগ মেসি ও ডিমারিয়া কেন্দ্রিক। এদের দুজনকে নিস্ক্রিয় করতে পারলে সম্পূর্ণ খেলা ব্রাজিল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারবে। বিশেষ করে মেসি, মারিয়া ও লাউতার যাতে বাড়তি কোন স্পেস না পায় । পক্ষান্তরে, ব্রাজিল কে আটকাতে আর্জেন্টিনা ও একই কৌশল নিবে। প্রতিপক্ষকে কোন বাড়তি সুযোগ দেয়া যাবে না এবং নেইমারকে মারকিং এ রাখবে আর্জেন্টিনা । কাউন্টার এটাক দ্রুত করতে হবে। সেক্ষেত্রে ব্রাজিল এভারটনকে লেফট উইংয়ে খেলাবে যতদূর সম্ভব । গত কোপায় আর্জেন্টিনার ডিফেন্সকে সে হুমকিতে ফেলেছিল। নেইমার যত ফ্রি  থাকবে প্রতিপক্ষের জন্য ততো টেনশন । ফিরামিনোকে সেন্টার ফরোয়ার্ড  হিসেবে খেলানো যায় । পাকুয়েতা নেইমার এভারটন ফিরামিনোর পজিশন চেঞ্জ করে খেলার অভ্যাস আছে। যা প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলবে। ফাইনালে সামান্য পরিমাণ ছাড় কেউ কাউ কে দিবে না। রিসেন্ট ফর্ম, ঘরের মাঠে কোপা, ফিফা রাঙ্কিং সব বিবেচনায় ব্রাজিল এগিয়ে থাকলেও কোপা এ আর্জেন্টিনা যেকোনো সময় খেলার ফল পরিবর্তন এর সক্ষমতা রয়েছে। তাই মোকাবেলা হবে সেয়ানে সেয়ানে । ৩৪ বছর বয়সী আর ৬ বারের বালন ডি অর জয়ি আরজেন্তাইন তারকা লেওনেল মেসি শেস বার কোন ট্রফি জিতেছিল ২০০৮ এ।  

আর্জেন্টিনা র টীম ফরমেশনঃ ৪-১-৩-২


আর কিছু তথ্যঃ 

★আর্জেন্টিনা ১৪ বার আর ব্রাজিল ৯ বার করে কোপা শিরোপা জিতেছে।

★১৯৯৮ সালের পর ব্রাজিলের মাটিতে ব্রাজিলকে এখনো হারাতে পারেনি আর্জেন্টিনা..।

★ব্রাজিলের মাটিতে হওয়া কোপা আমেরিকা সব গুলো ব্রাজিলই জিতছে...।

★ব্রাজিলের সর্বশেষ ৫কোপা আমেরিকার ফাইনালে সব গুলো ব্রাজিলই জিতছে..।

★১৯৫০বিশ্বকাপের পর মারকানাতে হওয়া কোনো প্রতিযোগিতা-মূলক ম্যাচ এখনো হারে নাই ব্রাজিল..।

★ ক্যাসেমিরো খেলেছে এমন প্রতিযোগিতা-মূলক ম্যাচে কখনো হারেনি তার দল..।



Argentina
HEAD TO HEAD
Brazil
20 MATCHES (3 DRAWS)
5TOTAL WINS12
3HOME WINS8
2AWAY WINS4
Last 5 Matches
2WINS
0DRAW
3WINS
BRA - ARG
BRA - ARG
ARG - BRA
BRA - ARG
BRA - ARG
2GOALS SCORED6
Games Over 2.5 Goals1 / 5
Both Teams Scored/ 5
TEAM COMPARISON
  • ATTACK
  •  
  • DEFENCE
  •  
  • DISTRIBUTION
  •  
  • DISCIPLINE
  • GAMES PLAYED
    6
    66
    6
    GOALS
    11
    1112
    12
    SHOTS ON TARGET
    40
    4036
    36
    SHOOTING ACCURACY
    61.5%
    61.5%52.9%
    52.9%
    CONVERSION RATE
    16.9%
    16.9%17.7%
    17.7%
    ASSISTS
    7
    78
    8


যাইহোক সুপার সান ডে র সুপার ক্লাসিকোতে দুই দলেই চাইবে জিততে কারন এক এ ত সুপার ক্লাসিকো অন্য দিকে ফাইনাল ম্যাচ।ব্রাজিল চাইবে টানা দ্বিতীয় বারের মতো তারা এই ট্রফি ঘরে তুলতে আর আর্জেন্টিনা তো আরো ব্যাকুল হয়তো মেসির লাস্ট কোপা আমেরিকার ম্যাচ হবে তার চেয়েও বড় কথা টানা তিন দশকের ট্রফি খরা ঘুচাতে মরিয়া মেসি । বুঝতেই পারছেন কি হতে যাচ্ছে। 

ব্রাজিল এর  গোল কিপিং এ এলিসন বা এডারসন যেই থাকে নাহ, কেনো বলার কিছু নাই, দুইজনেই ওয়াল্ড ক্লাস। দলের সেন্টার ব্যাক পজিশন বলতে গেলে ব্রাজিলের দুই জন বর্তমান বিশ্বের অন্যতম সেরা, এর মধ্যে মার্কু বিশ্বের অন্যতম সেরা বল প্লেয়িং সিবি,আর সিলভা বিশ্বের সেরা হোল্ডিং সিবি।তাদের দুইজনের মধ্যে কানেকশনটাও দারুন। আর এর ফলে অনেক সময় মার্কুকে সেকেন্ড ডিফেন্সিভ মিডের মতো দেখা যায়, এর ফলে ক্যাসে এবং ফ্রেড দুইজনেই উপরে উঠার সুযোগ পায়, যখন দল আক্রমণে যায় এই বিষয়টা অবশ্যই ভালো একটা লক্ষন। বিশেষ করে করে মার্কু একটু উপরে চলে আসলে ফ্রেডের জন্যে সুবিধা হয়, এর ফলে সহজেই ক্যাসে হালকা উপরে উঠে ক্রিয়েটিভ মিডের কাজটা করতে পারে।লাস্ট দুই ম্যাচে এটা দেখেছি। প্রায় ই ফ্রেডকে হালকা পিছনে রেখে ক্যাসে হালকা উপরে মানে সেন্ট্রাল মিডে চলে আসে, ক্রিয়েটিভ মিডের কাজটা করে যেহেতু মাঝমাঠে ক্রিয়েটিভ মিড নাই। এই সেন্ট্রাল মিড থেকে ডায়াগোনাল পাস এবং লং পাসে বারবার ই সে দলের আক্রমণ শুরু করে। আর সে ফ্রেড কে পিছনে রেখে হালকা উপরে উঠে আসার আরো একটু সুবিধা হলো ডিফেন্সদের জন্যে কিছুটা নিরাপদ জায়গা তৈরী করে দেওয়া মানে, সে উপরে উঠে এসে প্রতিপক্ষের বক্স টু বক্সের খেলোয়াড় এবং এট্যাকিং মিডের প্লে মেকারদের তৈরী কৃত আক্রমণ মাঝ মাঠেই নস্ট করে দিচ্ছে অনেক সময় এর ফলে ডিফেন্স আক্রমণ সরাসরি কম যাচ্ছে, আবার তার পিছনে থেকে ফ্রেড যারা ক্যাসেকে ফাকি দিচ্ছে তাদের সে আটকে দিচ্ছে, আর এর জন্যে সে তার ট্যাকেলিংটাকে ব্যাবহার করছে, লক্ষ করে দেখবেন এই টুর্নামেন্টে ক্যাসের চেয়ে ফ্রেডের ট্যাকেল বেশি। সুন্দরভাবেই সে এই ট্যাকেল গুলো করতে পারতেছে কোনো রকম ফাউল ছাড়াই, সে প্রতি ম্যাচে মাত্র ০.৮ টা করে ট্যাকেল করছে।  নেইমার এই টুর্নামেন্টে একজন তার সহযোগী প্লে মেকার চাচ্ছিলো, কিন্তু তিতে প্রথম দুই ম্যাচে তাকে ডিফেন্সিভ মিডের মতো খেলালেও নেইমাররে সহযোগী একজন তৈরী করার জন্যে এবং নেইমারকে যখন এক সাথে দুই জন তিন জন মার্ক করে,তখন যে স্পেসটা তৈরী হয় তা কাজে লাগাতে ফ্রেডের তৈরী করা ফ্রী স্পেসে নিয়ে যায় নেইমারকে সাহায্য করার জন্যে,এবং নেইমারের তৈরী করা সুযোগ গুলো কাজে লাগানোর জন্যে। এবং এর ফলে নেইমারে পাকুয়েতার বেশ কিছু ওয়ান টু ওয়ান গেম প্লে খেয়াল করেছি, এবং হালকা স্পেস পাওয়ায় সে প্রায় মেসির সমান চান্স ক্রিয়েট করেছে। এবং নেইমার যখন বল হোল্ডিং করে বক্সের ভিতের বা আশে পাশে তখন এক সাথে প্রতিপক্ষের দুই তিনজন খেলোয়াড় তাকে আটকানোর জন্যে চলে যায় এর ফলে বক্সের ভিতরে একটা বিশাল স্পেস তৈরী হয়ে যায় এর ফলে বক্সের ভিতরের এই জায়গা চলে যায় মার্ক হীন পাকুয়েতা এবং তার কাছে নেইমার বল পাঠালে যেহেতু সে মার্ক হীন হয়ে থাকে তাই সে সহজেই শট নেওয়ার সুযোগ পায়। এভাবেই লাস্ট দুইটা নক আউটের গোল পেয়েছে ব্রাজিল, অত্যন্ত কার্যকর মনে হয়েছে এই স্ত্রাতেজিতে। আর ঠিক একইভাবে ওভারল্যাপিং এবং সোয়াপ করে যাচ্ছে বারবার নেইমার সাথে রিচা এবং পাকুয়েতা,যদিও বা রিচা গোল পাচ্ছে না, অসংখ্য চান্স ক্রিয়েট করতেছে এবং তার গতির কাছে প্রতিপক্ষ বারবার নাজেহাল হচ্ছে এবং তাদের বাববার বিট করতেছে সে এই বিষয়টা প্রতিপক্ষের ডিফেন্সের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। আর এই যে নেইমার একই সাথে পাকুয়েতা এবং রিচার সাথে সোয়াপ করে কখনো লেফটে, কখনো এটাকিং মিডে কখনো স্ট্রাইকার হিসেবে খেলে যাচ্ছে বা যাবে এটাই একটা  অদৃশ্য শক্তি হিসেবে কাজ করছে ।

কোপা আমেরিকায় এ বার একের পর এক নজির গড়েছেন লিয়োনেল মেসি। হাভিয়ের মাসচেরানোর নীল-সাদা জার্সিতে সব চেয়ে বেশি ১৪৭টি ম্যাচ খেলার রেকর্ড ভেঙেছেন। প্রথম আর্জেন্টিনীয় হিসেবে ছ’টি কোপায় খেলে ফেলেছেন। তাঁর আগে কোনও একটা প্রতিযোগিতায় আর্জেন্টিনার কেউ অন্যদের দিয়ে এত গোল করাতে পারেননি। মেসি করিয়েছেন পাঁচটি গোল। কোপা ফাইনালের আগে কিংবদন্তি তারকার সামনে রয়েছে আরও রেকর্ড ভাঙার হাতছানি। দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবলারদের মধ্যে তিনি সব চেয়ে বেশি ৩৪টি ম্যাচ খেলার নজির গড়বেন ফাইনালে। এ বারের কোপায় মেসি এখন পর্যন্ত গোল করেছেন ছ’ম্যাচে চারটি। ছ’টি কোপা মিলিয়ে তাঁর মোট গোল ১৩টি। আর চারটি গোল করলে তিনি দক্ষিণ আমেরিকার সেরা প্রতিযোগিতায় সব চেয়ে বেশি গোল করার নজির স্পর্শ করবেন।

মেসি অবশ্য কোনও ব্যক্তিগত মাইল ফলক নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। কোপায় তাঁর একটাই লক্ষ্য এই মুহূর্তে। যে কোনও ভাবে দ‌লকে ব্রাজিলের মাটিতে নেমার দা সিলভা স্যান্টোস জুনিয়রদের হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন করা। না হলে আবার উঠবে সেই অস্বস্তিকর প্রসঙ্গ। অনেকেই বলতে থাকবেন, মেসি এখন পর্যন্ত দেশকে কোনও ট্রফি দিতে পারেননি! তাঁর যাবতীয় সাফল্য বার্সেলোনার জার্সিতেই। মেসিকে তাই বলতে শোনা গেল, ‘‘কোনও ব্যক্তিগত রেকর্ড নয়। আমি একটা জিনিসই চাই। এখান থেকে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিরতে।’’


#copaamerica2021

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ